দু চোখ মেলে খুঁজলে আমায় পাবে পথে প্রান্তরে
হৃদয় দিয়ে খুঁজলে পাবে বন্ধু তোমার অন্তরে।
তোমার চোখে অশ্রু এলে আমায় পাবে রুমালে
মাথার নিচে আমায় পাবে বন্ধু তুমি ঘুমালে।
আমায় পাবে তিস্তা গড়াই মধুমতির কিনারে
আমায় পাবে বীর সেনাদের স্মৃতির শহীদ মিনারে।
আমায় পাবে জলপ্রপাত সাগর নদী বৃষ্টিতে
আমায় পাবে গল্পকথায় ভিন্ন কিছুর সৃষ্টিতে।
আমায় পাবে পথের শিশুর ভাঙ্গাচুরা বস্তিতে
পাবে তাদের দুঃখ ব্যথা আনন্দ সুখ স্বস্তিতে।
তারায় তারায় আমায় পাবে স্তব্ধ নিঝুম নিশিতে
আমায় পাবে আঁধার বাসির কেরোসিনের শিশিতে
প্রেমিক রূপে আমার পাবে তাজমহলের গৌরবে
আমায় পাবে পাখির গানে মিষ্টি ফুলের সৌরভে।
আমার পাবে মেথর মুচির আত্মা দেহের ময়লাতে
আমায় পাবে আমার কামার ভাইয়ের হাতের কয়লাতে।
আমায় পাবে শিশুর হাসি তাদের কোমল মনটাকে
পাবে তাদের খেলনা খুশি গলায় বাঁধা ঘন্টাতে।
আমায় পাবে নির্যাতিত গৃহবধূর কান্নাতে
পাবে আমার বউয়ের সাথে ঘর গোছানো রান্নাতে।
আমায় পাবে বিদ্বাশ্রমের চাদ মেজে আর দেয়ালে
পাবে ইহার বন্দিবাসির যত্ন সেবা খেয়ালে।
সন্ধি স্বরূপ আমায় পাবে দুই মানুষের বিবাদে
মুজাহিদের তরবারি তীর ঘোড়ায় পাবে জিহাদে।
আমায় পাবে রোগীর ব্যথা তাদের কাঁদন অশ্রুতে
খুশির মাঝে আমায় পাবে তাদের সেবা-শশ্রূতে
আমায় পাবে পাগলিনীর উদাস পথের চলাতে
নীল গালিচায় পাবে তাহার নগ্ন পায়ের তলাতে।
বংশী হাতে আমায় পাবে গান কবিতার ছন্দতে
শান্তি কেতন হাতে পাবে ধর্ম নিয়ে দ্বন্দ্বতে।
সেনার রূপে আমার পাবে সৎ শাসকের শাসনে
ঘুনের মত আমায় পাবে দুষ্ট রাজার আসনে।
আমায় পাবে তিতুমীরের কামান দাগার গোলাতে
আমায় পাবে বেদের দলের কান্নাহাসির ঝোলাতে।
ঘাসের ফুলের মত আমায় পাবে ফুলের মেলাতে
আমায় পাবে বিশ্ববাসীর করুন অবহেলাতে।
আমায় পাবে চাঁদের আলো ভোরের শিশির বিন্দুতে
পাবে এতিম অসহায়ের ব্যথার বিষাদ সিন্ধতে।
জলের মত আমায় পাবে শিউলি গাছের গোড়াতে
আমায় পাবে চিকিৎসকের রক্তমাখা চুরাতে।
বুলেট বোমায় আমায় পাবে আমার এ দেশ রক্ষাতে
আমায় পাবে শত্রুসেনার মরণব্যাধী যক্ষাতে।
আমায় পাবে দীন ভিখারির শূন্য ভাতের থালাতে
আমায় পাবে ধর্ষিতাদের বুকের বেদন জ্বালাতে।
দুই স্থাপনার মধ্যখানে আমায় পাবে বন্দীরে
পাহারা দেই ঝগড়া না হয় মসজিদে আর মন্দিরে।
ফুলের সাথে সুতায় গাঁথা আমায় পাবে বাসরে
আমায় পাবে গাজী কালুর গ্রাম্য পুঁথির আসরে।
জগৎজুড়ে সৎ সৌখিন সুন্দর আছে যেখানে
ভিন্ন স্থানে ভিন্ন ধারায় আমায় পাবে সেখানে।
শিরোনাম আমার ঠিকানা
02
বাংলা ভাষার পাখা শব্দ
হয়ে গেল ফ্যান
এক "শ"হল হান্ড্রেড আর
দশ হয়েছে টেন ।
মেয়ে বন্ধু গার্লফ্রেন্ড হল
দুঃখিত টা সরি
খালা, ফুফু আন্টি হল
ট্যাবলেট হল বড়ি
শিক্ষক থেকে টিচার হল
বিদ্যালয়টা স্কুল
নাপিত ভাইয়ের সাইনবোর্ডে
হেয়ার হলো চুল ।
ফেব্রুয়ারির একুশ হলো
ফাল্গুন মাসের আট
কাগজ শব্দ পেপার হল
রোড রাস্তাঘাট ।
বিজ্ঞাপনে সাবান শব্দ
হল বিউটি সোপ
যাতায়াত টা জার্নি হল
স্টপ হয়েছে চুপ।
বাজার থেকে মার্কেট হল
শপিং কেনাকাটা
ভ্রমণ থেকে ট্যুর হল
জগিং ভোরের হাঁটা।
করমর্দন হ্যান্ডশেক হল
মুরগি চিকেন ফ্রাই
গাড়িচালক ড্রাইভার হল
চেষ্টা হল ট্রাই।
ব্যবস্থাপত্র প্রেসক্রিপশন আর
সেবিকা হল নার্স।
সম্পূর্ণটা ফুল হলো আর
অংশ হল পার্স ।
সাহায্যকারী হেলপার হল
গিফট উপহার
নববর্ষ হয়ে গেল
হেপি নিউ ইয়ার।
ক দিন আগেও ছিল না এই
মিশ্র ব্যবহার
চোখের সামনে ঘটে যাচ্ছে
এটা কি কারবার ।
বাংলা ভাষার অনেক শব্দ
পরছে ঝরে ঝরে
মায়ের মুখের ভাষা যাচ্ছে
আগাছা তে ভরে ।
এই জন্য দায়ী কিন্তু
তুমি আমি ভাই
অকারণে বাংলা রেখে
ভিনদেশী গান গাই।
এইজন্য কি রক্ত দিয়ে
বাংলা এনেছি
সালাম বরকত প্রশ্ন করলে
উত্তর দেবে কি ?
বিদেশী ভাষা ব্যবহারে
হই এসো সাবধান
বাঁচিয়ে রাখি প্রাণের প্রিয়
বাংলা ভাষার প্রাণ।
শিরোনাম:- বাঁচাও বাংলা ভাষা
লেখায় :-আমি ফেরদৌস আহমেদ
লেখা ভালো লাগলে আরো পড়তে আমার পেজটি ফলো করে সঙ্গে থাকুন।।
03
ফুল তুমি ফুট কেন ?
পরের তরে
আমি ফুটি বিশ্ব দিতে
গন্ধে ভরে।
বৃষ্টি তুমি ঝর কেন?
পরের হিতে
বিশ্বভুবন গাছপালাতে
সাজিয়ে দিতে।
সূর্য তুমি পুড়ছ কেন?
পরের হিতে
আমি পুড়ি সবার ঘরে
আলো দিতে।
মশক তুমি জন্মালে কেন ?
পরের তরে
জীবিকা দেই যারা মশক
নিধন করে।
চন্দ্র কেন রাত্রি জাগ?
সবার লাগি
তোমাদেরকে জোসনা দিতেই
রাত্রি জাগি।
বৃক্ষ তুমি জন্মালে কেন ?
পরের জন্য
সবার লাগি বুক বিলিয়ে
আমি ধন্য।
নদী তুমি ছুটো কেন?
আমি ও তাই
শস্য ফল ও ফুল ফোটাতে
পানি বিলাই।
মাটি তোমার স্বভাব কেমন?
আত্মত্যাগী
সকল আঘাত বুক পেতে নেই
সবার লাগি।
মানুষ তুমি জন্মালে কেন ?
বলছি কারণ
ভোগ বিলাসে কাটিয়ে দিতে
সোনার জীবন।
সুখের খোঁজে তাই যাহা পাই
আঁকড়ে ধরি
নিজে মরি মানুষ ঠকাই
মানুষ মারি।
প্রকৃতি কয় ভোগের মাঝে
নাইরে সুখ
বিলিয়ে দেখ পরম সুখে
ভররে বুক।
শিরোনাম সুখের সন্ধান
লেখায় আমি ফেরদৌস আহমেদ।
04
হাসপাতালের কাছাকাছি
সবজি-মাছের হাটে
কসাই ব্যাটা গোশত বেচে
গরু ছাগল কাটে।
তাহার আবার সুনাম অনেক
জানে সারাদেশ
ওজনে সে কম দেয় না
মাংসটা দেয় ফ্রেশ।
একদিন সেই সুনাম ওয়ালা
গোশত দোকানদার
জবাই করল একটা গাভী
দুইটা বড় ষাঁড়।
হাত-পা ছুড়ে কাঁদছে গরু
অশ্রু ভেজা চোখ।
অবাক চোখে তাকিয়ে আছে
পাশের অনেক লোক।
শান্ত হলে কসাই বেটা
চামড়া গুলো কেটে
সবার সামনে মারলো ছোড়া
গাই গরুটার পেটে।
মরা বাছুর বেরিয়ে এল
গাভীর উদর থেকে
সবার মনে লাগলো নাড়া
এই অবিচার দেখে।
অবুজ পশুর ভ্রুণ হত্যার
তীব্র প্রতিবাদে
সকল মানুষ উঠল জেগে
কাঁধ মিলিয়ে কাঁধে।
সবার মুখে একই স্লোগান
এক দফা এক দাবি
জবাই করা চলবে না আর
গর্ভবতী গাভী।
তাহার পাশেই হাসপাতলে
হচ্ছে আবার খুন
প্রতিবাদী জাগ্রত এই
মানবজাতির ভ্রুন।
মানবজাতির ভ্রুনের ওপর
চলছে অবিচার
হয়না কোন মিছিল-মিটিং
হয়না সেমিনার।
পশুদের ভ্রুণ হত্যা হলে
প্রতিবাদী হই
মানুষের ভ্রুন গুমড়ে কাঁদে
বিপ্লবীরা কই!
মানুষের ভ্রুণ হত্যা চলে
স্পষ্ট দিবালোকে
নেই প্রতিবাদ মানবতা
মরছে ধুকে ধুকে।
নবজাতক হত্যা করে
ফেলে রাখে পথে
কই না কথা আমরা সবাই
চলছি যে যার মতে
গাভির পেটের ভ্রুণ হত্যার
জোড় প্রতিবাদ হয়
মানুষের ভ্রুণ হত্যা চলে
কেউ না কথা কয়।
বিষয়টি এই প্রশ্ন বোধক
চিহ্ন টা যায় রাখি
পশুর চেয়েও মানুষের দাম
কমে গেল না কি!
শিরোনাম :- কালের প্রশ্ন
লেখায় :- আমি ফেরদৌস আহমেদ
ছবি :-আমার তোলা
05
আমার একটা বাড়ি ছিল পদ্মা নদীর তীরে,
সাত পুরুষের জনম গেছে খরকুটার এই নীড়ে
একটুখানি উঠোন ছিল ছোট্ট ক টা ঘর
পাশেই ছিলো বাবা-মায়ের পুরনো কবর।
দক্ষিনে এক পুকুর ছিল কানায় কানায় জল
দখিন হাওয়ার ঢেউ গুলো তার করত টলমল।
হালের দুটো বলদ ছিল একটা দুধের গাই
ওরা যেন ছিল আমার ভগ্নি এবং ভাই।
ঘরের মুখে ছিল দুটো লাল গোলাপের চারা
সারা বাড়ি থাকতো ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা
লাল পুঁইয়ের এক মাচা ছিল আঙ্গিনার এক পাশে
পুঁইয়ের ডগা দুলত সেথায় দক্ষিণা বাতাসে।
তাজমহলের রূপ ছিল মোর সবুজ-শ্যামল নীড়ে
আসতে যেতে পথের পথিক চাইত ফিরে ফিরে।
এই বাড়িতে তেমন সুখেই যাচ্ছিল দিন কেটে
যেমন সুখে শিশুরা সব ঘুমায় মায়ের পেটে।
আমার এ সুখ সইল না ঐ পদ্মা নদীর প্রাণে
বান ডেকে সে ঢেউ তুলে মোর বক্ষে আঘাত হানে।
ঘরবাড়ি সব ভাসিয়ে নিল ভাসালো দুই আঁখি
অশ্রু ছাড়া কিছুই সে মোর রাখল না আর বাকি।
কাল যেখানে ছিল আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই
আজ সেখানে জলের খেলা আমার কিছুই নাই।
বাপ মা আমার ঘুমিয়ে ছিল কাল যে মাটির ঘরে
আজ সেখানে নদীর পানি রঙ্গে খেলা করে।
সাত পুরুষের স্মৃতির মতন নাই কো কিছুই আর
নদীর জলে ভাসছে তাদের গোর কবরের হাড়।
নদীর জলে হাড় পেলে কেউ বক্ষে তুলে নিও
গোর হারা মোর মায়েরে আবার দাফন করে দিও।
কাল যেখানে থাকত বাঁধা আমার বলদ গাভী
আজ সেখানে বানের জলে ভাসছে হাবিজাবি।
তদের সাথে যদিও আমার রক্ত বাঁধন নাই
তবুও ওরা ছিল আমার ভগ্নী এবং ভাই।
আমার সুখে হাসত ওরা কাঁদত আমার দুখে
নিজের বাছুর উপুস রেখে দুধ দিতে মোর মুখে।
হাসিমুখে আমার সাথে টানত ওরা হাল
ভাইয়ের মতোই সঙ্গ দিয়ে আসছে চিরকাল।
আমার এ সুখ হয়নি হজম পদ্মা নদীর চোখে
আঘাত করে আমাদের এই ভাই বাঁধনের বুকে।
হঠাৎ দেখি তার আঘাতে উঠোন গেছে ফেটে
প্রাণ বাঁচাতে দিলাম ওদের গলার দড়ি কেটে।
নদীর জলে ভাসিয়ে দিয়ে সাত জনমের বাঁধন
অবাক চেয়ে শুনছি তাদের হাম্বা সুরের বাঁধন।
বিদায় কাঁদন কান্ধে ওরা আমার দিকে চাহি
আমিও কাঁদি কান্না ছাড়া কিছুই করার নাহি।
জানিনা আজ কোথায় ওরা মরল না কি আছে
কোথায় পাব তাদের খবর সুধাই বা কার কাছে।
নদির জলে পাও যদি কেউ তিনটি বলদ গাই
বুঝে নিয়ো এরাই আমার হারানো বোন ভাই।
বিনয় করে বলছি তোমার পা জড়িয়ে ধরে
একটু তাদের থাকতে দিও তোমার গোয়াল ঘরে।
06
যারা আমার নাম দিয়েছে
তাদের মাথায় গন্ডগোল
আমি থাকি মাটির মাঝে
আমারে কয় ছিন্নমূল।
তুমি আমি আমরা সবাই
দেখে আসছি জীবন ভর
মাটি ছাড়া আর কিছুতেই
পুঁতা যায় না মূল শিকড়।
মাটির মাঝেই জন্ম আমার
মাটির মাঝেই বসবাস
মাটির মাঝেই পাটি পেতে
ঘুমাই আমি বার মাস।
শিকর আমি পুঁতে ছিলাম
গর্ভ থেকে বেরিয়ে
এতদিনে মূল সে শিকর
পাতাল গেছে পেরিয়ে।
সারা মাটি ছেয়ে গেছে
আমাদের মূল শিকড়ে
সেই আমারে ছিন্নমূল বা
মূল হারা কও কি করে?
শিরোনাম কালের প্রশ্ন
লেখায় আমি ফেরদৌস আহমেদ
07
ভালবাসি চাঁদ জোসনার রাত
শ্রাবণের রিমিঝিমি ধারা
ভালবাসি ফুল শিমুল পারুল
আকাশের মিটি মিটি তারা।
ভালোবাসি খাঁটি এদেশের মাটি
পাখিদের কুহু কলতান
আরো বাসিভালো জোনাকির আলো
তটিনির কলকল গান।
ভালবাসি আর নদী ও পাহাড়
খোলামেলা ফসলের মাঠ
ভালোবাসি লিখা অজানাকে শিখা
অবসরে প্রিয় বই পাঠ।
ভালোবাসি সুর পাখি ডাকা ভোর
রাখালের বাঁশরীর তান
আরো ভালবাসি প্রকৃতির হাসি
ফুল পাখি ভ্রমরের গান।
ভালবাসি আলো যাহা কিছু ভালো
জুলুমের প্রতিবাদ করা
জ্ঞানীদের দেখে ভাল কিছু শেখে
আপনারে ভেঙেচুরে গড়া
ভালোবাসি আর ভালো ব্যবহার
হাসিমুখে ক্ষমা করে দেয়া
আরো ভালোবাসি নিরীহের হাসি
ভালোবেসে কাছে টেনে নেয়া।
মুখে নিয়ে হাসি হাতে ভালোবাসি
জ্ঞানীদের চরণের দাসী
সাদাসিধে চলা কথা কম বলা
দুই ঠোঁটে বেঁধে রাখা হাসি।
ভালবাসি শিশু সব প্রাণী পশু
যাহাদের বুকে আছে প্রান
কাঁদে যদি প্রাণী চোখে আসে পানি
বুকে বাজে বিবহের গান।
ভালোবাসি যারা সৎ পথ হারা
পাপীতাপী সমাজের বোঝা
ভালোবাসি তাকে জড়িয়ে এ বুকে
তার লাগি ভালো পথ খুঁজা।
সবচেয়ে বেশি তাকে ভালোবাসি
যার কাছে হাত তুলে মাগি
ভালোবাসা আর সকল আমার
সে মহান মালিকের লাগি।
শিরোনাম আমার ভালোবাসা
লেখায় আমি ফেরদৌস আহমেদ।
08
তিনদিন ধরে আমাদের ঘরে
খাবার পায় না কেউ
সবার উদরে ক্ষুধার যাতনা
দু চোখে জলের ঢেউ।
কেউ বা ক্ষুধায় লুটায়ে পড়েছে
লুকিয়ে কাঁদছে কেহ
পানির পিয়াসে কারো বা আবার
ঢলিয়া পড়ছে দেহ।
সকল সুখের সারতি আমার
বাম পাঁজরের হাড়
সেই যে সকালে চোখ বুজে ছিল
দু চোখ মেলে নি আর।
নাড়া দিয়ে দেখি ঘরনী আমার
ভাঙিয়া আমার জোড়া
চিরতরে মোরে একলা করিয়া
আকাশে দিয়েছে উড়া।
হারানো সাথীর মুখপানে চেয়ে
ভিজিয়া উঠল আঁখি
বুকের গহীনে কাঁদিয়া উঠিল
সাথীহারা প্রাণ পাখি।
না শুকাতে মোর নয়নের পানি
রজনী হইল ভোর
বিধাতা নীতি ভুলে সব প্রীতি
কাটিতে হইবে গোর।
চারিদিকে শুধু পানি আর পানি
কোনখানে নাই মাটি
কোনখানে বল শুয়াই তাহারে
কোথা বা কবর কাটি।
জলে ভরভর সারা গ্রাম ঘুরে
না পেয়ে কূলের দেখা
মরা লাশ নিয়ে তিন দিন ধরে
কাঁদিয়া মরছি একা।
সারাটা জীবন রেখেছি যাহারে
পরম আদরে স্নেহে
বিদায়ের ক্ষনে আজকে তাহার
পঁচন ধরেছে দেহে।
চোখের সামনে পঁচে গলে যায়
আমার কলিজা দেহ
যতনে তাহারে দাফন করিবে
নাই কি রে আজ কেহ!
ওদিকে আমার নয়নের মণি
চার ছ মাসের মেয়ে
তিন দিন ধরে উপুস রয়েছে
মায়ের দুধ না পেয়ে।
তিন দিন ধরে অনাহারে তার
শুকিয়ে গিয়েছে মুখ
অক্ষিকুটরে ঢুকে গেছে তার
টানা টানা দুই চোখ।
কিছুক্ষন ধরে মা মনি আমার
তুলে না ক আর মাথা
কুটি কুটি হেসে হাত পা চুড়ে না
নড়ে না চোখের পাতা।
চোখের সামনে বুকের মানিক
তিলে তিলে যায় মরে
নাই কিরে কেউ ভালোবেসে তারে
টানিয়া লইবে ক্রূরে।
মানবপ্রেমী কেউ কি এমন
নাই রে দুনিয়াতে
আসবে রে আজ কোদাল কাফন
দুই ফোটা দুধ হাতে।
শিরোনাম বানভাসীদের কান্না
লেখায় আমি ফেরদৌস আহমেদ
09
লোকে বলে নারীর না কি হয় না কোন ঘর
নারী ছাড়া একলা কভু ঘর বাঁধে না নর।
যুগে যুগে এই দুনিয়ায় হইছে যত বাড়ি
পুরুষ জাতি বেঁধেছে তা রাখতে তাতে নারী।
সকল বাড়ি তৈরি নারীর প্রেমের অনুরাগে
কোন পুরুষ ঘর বাঁধে না সঙ্গী পাওয়ার আগে।
নারীর প্রেমের পরশ পেতে হইতে নারীর বর
পুরুষ জাতি কষ্ট করে বানায় বাড়িঘর।
পুরুষ জাতি যত বাড়ি বেঁধেছে এই ভবে
সব বেঁধেছে নারীর নিশি সঙ্গী হওয়ার লোভে।
নারীর প্রেমের নারীর ছোঁয়ার স্বাদ না এলে মনে!
কোন পুরুষ বাঁধত না ঘর ঘুরত বনে বনে।
যতরকম বসতবাড়ি আছে ভুবনকূলে
পুরুষরা তার মিস্ত্রি মালিক নারীরা তার মূলে।
নারী হল বাড়ির শোভা নারীই বাড়ির প্রান
পুরুষরা তার কর্তা মালিক রক্ষী দাড়োয়ান।
নারীর নাকি হয়না বাড়ি অমূলক এই দাবি
নারীর হাতেই থাকে রে ভাই সকল বাড়ির চাবি।
নিজের টাকায় নিজের শ্রমে বান্দে যে ঘর নরে
নরের চেয়ে নারীই তাতে বেশি বিরাজ করে।
সাতসকালে পুরুষরা সব ঘর ছেড়ে যায় কাজে
ঘরবাড়ি সব আগলে রাখে নারীই বুকের মাঝে।
দিবানিশি অষ্টপ্রহর গৃহে কাটায় যারা
পাই না ভেবে কেমন করে হয় সে গৃহহারা।
পুরুষরা হয় বাপের ভিটার উত্তরাধিকারী
পিতার গৃহ স্বামীর গৃহ দুই গৃহে পায় নারী
চলুন জানি কোন ঘরে তার কদর কতখানি
পিতার ঘরে রাজকন্যা সে পতির ঘরে রানি।
কে বলেরে এই দুনিয়ায় গৃহহীনা নারী
পিতা পতি ভাইয়ের বুকেই তাদের বসতবাড়ি।
শিরোনাম:- নারীর বাড়ি
লেখায়:- আমি ফেরদৌস আহমেদ।
10.
আমি হতে আসিনি রবি-শশী তারা রঙ্গিলা আলোরঝার
আমি এ ভুবন আলোয় রাঙানো বিলীন অন্ধকার।
আমি নিতে আসিনি ললাটে আমার জয়জয়কারের টিকা
আমি এসেছি নিজেরে পুড়িয়ে জ্বালাতে আলোর শিখা।
আমি আসিনি বন্ধু কুসুম কুড়িয়ে মিটাতে মনের রুচি
আমি আসিয়াছি ত্যাগী কুসুমের করতে কদমবুচি।
আমি হতে আসিনি খুপার কুসুম কন্ঠে সোনার হার
হইতে এসেছি বিশ্ব মানব জাতির চৌকিদার।
আমি হতে আসিনি মাটির ভুবনে অট্টালিকার মালিক
আমি হতে এসেছি স্বাধীনচেতা মুক্ত ময়না শালিক।
আমি হতে আসিনি গোলাপ গাঁদা সুভাষিত অপরুপ
আমি সুমধুর গন্ধ ছড়াতে নিজেরে পুড়ানো ধূপ
আমি হতে আসিনি খাসার প্রদীপ মশাল প্রজ্বলিকা
আমি প্রদীপের তেল নিজ প্রাণ দানে জ্বালাই প্রদীপ শিখা।
আমি হতে আসিনি বীরের হাতের মহাদামি তরবারি
আমি সস্তা লোহার ঢাল আঘাত সয়ে সবারে রক্ষা করি।
আমি তো আসিনি দু ঠোঁটে আমার বাধিয়া রাখতে হাসি
যে বাঁশির সুরে হাসিবে সবাই আমি সে বাঁশের বাঁশি।
আমি জগতের রূপ সুধা পানে
ভরতে আসিনি প্রান
আমি এসেছি সকলের তরে আমারে করতে দান।
শিরোনাম:- আত্মদান
লেখায় :- আমি ফেরদৌস আহমেদ
11.
ও চাষী ভাই কাঁদছ কেন গোমরা কালো মুখে
ফসল তোমার খাইছে বুঝি রোগ বালাই আর পোকে?
কত সময় আলসেমি আর হেলায় খাটাও তবু
তোমরা তো ভাই কেউ কখনো বই পড় না তবু।
একটু যদি বই পড়িতে পাইতে রে ভাই পার
বই হতো তোর সোনার ক্ষেতের কীটনাশক আর সার।
চাষাবাদের নিয়ম কানুন বইয়ের মাঝে পেতে
তাহার জ্ঞানে সোনার ফসল ফলত তোমার ক্ষেতে।
ক্ষেতের কাজের পাশাপাশি ন
লইলে হাতে বই
আজকে তোমার পাকা ধানে পরতো না আর মই।
কৃশান শ্রমিক তোমরা যদি বই নিতে ভাই হাতে
হাসতে তুমি সোনার ফসল হাসতো তোমার সাথে।
কি দোকানি কাঁদছ কেন কি গো তোমার ব্যথা
দোকানে তোর নাই বুঝি মাল নাই বুঝি তোর ক্রেতা?
তোমরা তো ভাই অনেক সময় কাটাও হেলা করে
সময় পেলেও কেউ কখনো দেখনা বই পড়ে।
মাঝে মাঝে বই পড়িলে পাইতে সুফল তার
বইয়ের গন্ধে তোর দোকানে আসত খরিদ্দার।
বইয়ের মাঝে পাইতে তুমি ব্যবসা করার নীতি
কোনকালেও দোকানে তোর জ্বলত না লাল বাতি।
ছোট্ট বড় সব দোকানি বই যদি নাও হাতে
হাসবে তুমি ব্যবসা তোমার হাসবে সাথে সাথে।
কি হলো গো বেকার যুবক কাঁদছ কেন ভাই
লেখাপড়া করেও তোমার আজ বুঝি কাজ নাই?
তোমরা যদি বইয়ের থেকে শিক্ষা নিতে দাদা
অন্য কারো চাকর হতে শিক্ষা দিতো বাঁধা।
মন লাগিয়ে পড়তে যদি উচ্চমানের বই
বই হত তোর নিজের পায়ে ঊর্ধ্বে ওঠার মই
বইয়ের মাঝে পাইতে তুমি নতুন পথের দিশা
বইয়ের আলোয় উঠত জেগে কর্ম করার নিশা।
বইয়ের আলো সত্যি যদি পড়তো তোমার মনে
বেকার থেকে পারতে না আর ঘুরতে বনে বনে।
বেকাররা সব বই জড়িয়ে ধরলে বুকের মাঝে
নিজের গুনে বই তাহাদের নামিয়ে দিত কাজে।
কি হলো গো মা জননী কাঁদছো কি বা শোকে
কুলের শিশু উপোস বুঝি দুধ আসে না বুকে।
তোমরা তো মা টিভি দেখে সময় কাটাও তবু
ইচ্ছে করে কেউ কোনদিন বই পড় না তবু।
কাজের ফাঁকে তোমরা মাগো বই পড়িতে যদি
বই হত তোর শিশুর মুখের দুধ সুজি আর দধি।
বই দিয়ে সেই নীতির সাথে হয়ত পরিচয়
কেমন করে মা ও শিশুর যত্ন নিতে হয়।
শিশুর সাথে বই যদি আজ থাকত মায়ের কোলে
সকল শিশু উঠত বেড়ে বইয়ের দোলায় দোলে।
কি হলো গো বিশ্ব মাতা তোমার চোখে পানি
বাসিন্দা তোর করছে বুঝি দাঙ্গা হানা হানি?
বিশ্ববাসী কান্দে আজি বিশ্ব মা তোর ভূলে
বিশ্ববাসীর হাতে তুমি দাওনি কিতাব তুলে।
সবার মনে ফেলতে যদি বই কিতাবের ছায়া
সবার মনে সবার প্রতি উঠত জেগে মায়া।
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিলে বই কিতাবের ফুল
বইয়ের আলোয় স্বর্গ হতো বিশ্ব মা তোর কূল।
শিরোনাম :- বইয়ের গুরুত্ব
লেখায়:- আমি ফেরদৌস আহমেদ।
12.
কোথায় গেল সোনার সময় সোনার মানুষ কই!
কোথায় গেল লাঙ্গল জোয়াল কোথায় গেল মই।
কোথায় গেল গরুর গাড়ি কোথায় গরুর হাল
কোথায় গেল রংবেরঙের ডিঙি নায়ের পাল।
কোথায় গেল মাটির কলস
সেই কলসির জল
ঘরের শোভা রঙিন শিখা কোথায় গেল বল!
শকুনরা সব কোথায় গেল কোথায় গেল কাক
কোথায় গেল শিয়াল মামার হুক্কাহুয়া ডাক।
কোথায় গেল শিল আর পাটা পাটার ভাটা ঝাল
কোথায় গেল কাঠের ঢেকি ঢেকির ছাঁটা চাল।
কোথায় গেল পালকি চলার হুনহুনাহুন সুর
ঠেলার গাড়ি হারিয়ে গেল হায়রে কত দূর।
কোথায় গেল রাত্রি জেগে চিঠি লেখার দিন
কোথায় গেল হারিকেন আর কোথায় কেরোসিন।
কোথায় গেল গরুর টানা আঁখ মারানোর কল
কোথায় গেল গ্রামের বাড়ির বাংলা ঘরের ছল।
বিয়েবাড়ির গীতের আসর কোথায় গেল ভাই
কলাপাতায় আহার করার মেজবানিটাও নাই।
কোথায় গেল কাঁচের চুড়ি রেশমী ফিতার সাজ
কোথায় গেল হায় রুমালের সুতার কারুকাজ।
কোথায় গেল মাটির কূপের মিষ্টি স্বাদের জল
কোথায় গেল ডাল মারানোর শিলার যাঁতাকল।
কোথায় গেল কুলুর বলদ বন্ধ যাহার চোখ
কোথায় গেল হুক্কা তামাক হুক্কা টানার লোক।
হারানো সুর খুঁজতে গিয়ে সবচেয়ে ব্যথা পাই
যখন দেখি কোরআন শিখার মকতব ও আর নাই।
শিরোনাম:- হারানো দিনের স্মৃতি
লেখায় :-ফেরদৌস আহমেদ
13.
ধনের আশায় বিদ্যা শেখা পেশায় শিক্ষাগুরু
তাদের কাছেই শিশুদের হয় শিক্ষাজীবন শুরু।
একই আশায় বিদ্যা শিখা মাতা পিতার খুন
মিলেমিশে বানায় তাদের ছেলেমেয়ের ভ্রুন।
মাতাপিতার চল চেতনা রক্তে তাদের মিশে
ছড়িয়ে পড়ে শিশুর শিরায় রুপ নিয়ে এক বিষে
শিশুর মাথায় মাতাপিতার রক্তে লিখা হয়
পড়তে হবে ধনি হতে মানুষ হতে নয়।
বড় হয়ে শিশুর ঘরে রাখে টাকা বই
মাতাপিতা বৃদ্ধাশ্রমের বন্দিবাসি হই।
শিশুকালেই শিখানো হয় উল্টৌ ধাঁচের ছড়া
গাড়ি ঘোড়ায় চড়বে যারা করবে লিখা পড়া।
অযাচিত এই ছড়ার সাথে আমার বড় ক্রুভ
শিশুর মাথায় এ যে ছড়ায় মারসেটিসের লোভ।
জন্মগত ভাবেই মানুষ ভোগবিলাসি হয়
ভোগের কথা কাউকে কি আর শিখিয়ে দিতে হয়!
খাবার খুঁজার নিময় কানুন শিখানোর কি আছে
কাঠ কোটরের অন্ধ সাপ ও খাবার খেয়ে বাঁচে।
প্রথম থেকেই শিশুদের কে শিক্ষা হবে দিতে
বিবেক দিয়ে মন চালাতে মনের বিপরীতে।
জমিয়ে রাখা মানুষ জাতির স্বভাবগত লয়
শিখাতে হয় কেমন করে বিলিয়ে দিতে হয়।
নতুন ছড়া শিখতে হবে পুরনো ছড়া ছাড়ি
আমার পিঠে চড়বে মানুষ আমি হব গাড়ি।
শিখাতে হয় টাকাপয়সা মূর্খ লোকের ধন
শিক্ষিতদের উত্তম আচার উচ্চতর মন।
টাকার লাগি বিদ্যাশিক্ষা চলবে যত কাল
জন্ম নেবে মানব শিশু বাড়বে পশুর পাল।
শিরোনাম:- সুশিক্ষা
লেখায়:-আমি ফেরদৌস আহমেদ।
ছবি :- সংগৃহীত।
14
মনের ঘরে ছন্দ আসে
ঘরের মুখে পাওনাদার
দুই দুয়ারির গন্ডগোলে
কাব্য লেখা হয় না আর।
মনের কথার ফুল কলিতে
বিষ ভ্রমরা ফুটায় হুল
বিষের জ্বালায় কান্দে কবি
কাব্য কলি হয় না ফুল।
কাব্য লেখার স্বপ্ন কাঁদে
সাধ্য শখের অন্তরায়
উঠতে চলা প্রভাত রবি
ভোর বিহানেই অস্ত যায়।
মাথায় সোনার ছন্দ আসে
যখন তারে লিখতে যাই
ঘর গৃহিণী চেঁচিয়ে বলে
দু দিন ধরে লবণ নাই।
হায়রে আমার ব্যথার জীবন
হায়রে আমার পান্তা নূন
তোর কারনে মায়ের পেটেই
কাব্য শিশু হইল খুন।
ছন্দ লেখার গন্ধ পেয়ে
খুশিতে দেই হাততালি
মন ভেঙে যায় যখন দেখি
বধুর জামায় সাততালি।
কথার যে ফুল শিশুর মত
আসল আমার কোলজুরি
জ্যান্ত তারে কবর দিয়ে
শূন্য করি ফুলঝুরি।
কাব্য করে লিখতে তারে
চন্দ্র তারা বাড়ায় হাত
পেছন থেকে বাচ্চা বলে
শূন্য থালায় দাও হে ভাত।
বিষন্নতায় ভেঙ্গে পড়ে
ক্লান্ত মনের ঘর দুয়ার
দমকে দাড়ায় উতলে উঠা
কাব্যকথার ভর জোয়ার।
বিরম্বনার খড় পুড়িয়ে
যদিও কিছু হয় লিখা
চার দেয়ালেই বন্দি থাকে
কাব্যের আলোর সেই শিখা।
কে তাহারে বাসবে ভালো
ছড়িয়ে দেবে বিশ্বময়
সোনার লেখা ও ধূলায় গড়ায়
লেখক যদি নিঃস্ব হয়।
সমাজ জুড়ে ছড়িয়ে আছে
জাত বেজাতের ধুম্রজাল
হেলায় হেলায় তাই নিভে যায়
আমার লেখার মোম মশাল।
শিরোনাম :- চাপা কান্না
লেখায় :-আমি ফেরদৌস আহমেদ।
14
আমি অতি সাদামাটা ,অতি সাধারণ
ভুবনে পথিক বেশে ,কাটাই জীবন।
রঙ্গিন ভুবনে আমি ,অতি সাদাকালো
প্রাসাদ সহে না মোর ,পথে লাগে ভালো।
পেয়েছি কর্মস্থলে ,সোনার আসন
সম্মানী পদবী ও মূঠো ভরা ধন।
বিছানো বিষের কাঁটা , আসন জুড়ে
অনিয়ম, অবিচার, অহংকারে।
অনিয়ম অবিচার ,সহে না যে মন!
বেছে নেই ফুটপাতে ,ধূলার জীবন।
হালাল কামাই করি ,লাজ ভয় নাই
ফুটপাতে সিঙ্গারা বেচে ,জিবীকা চালাই।
যখন যেমন পাই, তাই নিয়ে সুখী
বুক ভরি ,ফুল ,পাখি ,আকাশ দেখি।
আমি যে ক্ষুদ্র অতি ,করি ছোট কাজ
কতক স্বজন দেখে ,পায় মনে লাজ।
পথে যেতে দেখা হলে ,আর চোখে চায়
পশুর বিমুখে মোর ,কি বা আসে যায়!
পেয়েছি অনেক মানুষ, সোনার মত
কর্মের মান তারা ,দেয় যথাযথ।
আমার এ ধূলার দেহ, বুকে নেয় টেনে
তাদের প্রণাম ,সালাম ,করি আনমনে।
পরিচয় হলো এবার ,ঠিকানা জানাই
ভালো লাগলে এস বোন, বন্ধু ও ভাই।
কিশোরগঞ্জ জেলা আমার ,থানা হোসেনপুর
সদর শহর হতে, খানিকটা দূর।
রামপুর নামে সেথা ,গ্রামের বাজার
এখানে সিঙ্গারা বেচে ,করি দিন পার।
হিংসো না আমি যে ,ক্ষুদ্র অতি
রেখেছি তোমার লাগি, হৃদয় পাতি।
শিরোনাম:- আমি যে ক্ষুদ্র অতি।
লেখায়:- আমি ফেরদৌস আহমেদ।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:-আমার প্রাণ প্রিয় ভাই বোন ও বন্ধুগণ, আপনারা অনেকেই আমার সম্বন্ধে জানতে চেয়েছেন।
আমি আসলে অতি সাধারণ একজন মানুষ।
নাম ফেরদৌস আহমেদ
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বিন্নাটি ইউনিয়নের কোট্টাগর নামক গ্রামে আমি থাকি।।
১৯৯৯ সালে এসএসসি পাস করার পর আর লেখাপড়া হয়নি।
পেশায় আমি একজন ঝালমুড়ি বিক্রেতা,বাড়ির পাশের রামপুর নামক বাজারে কখনো ঝালমুড়ি কখনো পুরি সিঙ্গারা বিক্রি করে জীবিকা চালাই।
আমার বাবা বেঁচে নেই মা আছেন।
আমরা চার ভাই দুই বোন সবাই বিবাহ করে আলাদা আলাদা।
ছোটবেলা থেকেই আমি লেখালেখির সাথে জড়িত, প্রকাশের কোন মাধ্যম না থাকায় যখন মন চাইতো লিখতাম আবার ছিড়ে ফেলে দিতাম।
দু-তিন বছর আগে মোবাইল কিনার পর ফেসবুকে লেখালেখি শুরু করি।
এর মধ্য পরিচিত হই লন্ডন প্রবাসী মরিয়ম চৌধুরী নামের একজন উধার মনের বোনের সাথে।
কিছুদিন পর আমার মোবাইলটা নষ্ট হয়ে গেলে উনি আমাকে একটা মোবাইল উপহার দেন।
পাশাপাশি আদর স্নেহ ভালবাসা উৎসাহ অনুপ্রেরণা দিয়ে লেখালেখিতে উদ্বুদ্ধ করেন।
ওনার সাথে পরিচিত হওয়ার পর থেকে উনি নানা দিক থেকে আমাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে আসছেন।
আমার লেখার প্রচার প্রসারের জন্য উনি কোন চেষ্টাই বাকি রাখেন নি।
উনি আমার বোন হলেও আমার লেখালেখির ব্যাপারে উনার দেখাশোনার দায়িত্বটা মায়ের চেয়ে কোন অংশে কম নয়।
উনার মাধ্যমে ইতিমধ্যে আমার একটি যৌথ বই ও প্রকাশ হয়েছে।
সবাই আমার এই বোনটির জন্য দোয়া করবেন।
উনার মাধ্যমে ফেসবুকে পরিচিত হলে পাঠকের খুব ভালো সাড়া পাই এবং সবার অনুরোধে একটি বই প্রকাশ করার চেষ্টা করি।
কিন্তু নানাবিদ সমস্যার কারণে শেষ পর্যন্ত আর করা হয়ে ওঠেনি।
আল্লাহ চাহে তো আগামী বইমেলায় হবে ইনশাআল্লাহ।
এই হল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়।
সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য।
No comments:
Post a Comment
আপনার মেসেজের জন্য ধন্যবাদ, আপনাদের সকল মেসেজ গুলি আমি দেখি, ব্যাস্ততার জন্য অনেক সময় উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়না, আশা করি সময় করে সবার উত্তর দিবো, ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।