Pages
Adsterra
a-ads
pop
Friday, August 26, 2022
গায়ক,গীতিকার,সুরকার অভিনেতা।শচীন দেব বর্মণ, মান্না দে যার সুযোগ্য শিষ্য। কৃষ্ণচন্দ্র দে।
কৃষ্ণচন্দ্র দে (২৪শে আগস্ট,১৮৯৩ — ২৮শে নভেম্বর,১৯৬২) ছিলেন বাংলা সঙ্গীতের একজন আদি ও প্রবাদ পুরুষ, কিংবদন্তী কণ্ঠশিল্পী, সিনেমা ও থিয়েটার অভিনেতা, থিয়েটার প্রযোজক, সঙ্গীত পরিচালক ও দক্ষ সংগীত শিক্ষক। তিনি মুম্বাইয়ের সঙ্গীতজগতে সঙ্গীতাচার্য 'কে.সি.দে' নামেও সুপরিচিত। বাংলার অপর এক কিংবদন্তী শচীনদেব বর্মণের প্রথম সঙ্গীত শিক্ষক ছিলেন তিনি। তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র বৈচিত্র্যের বিচারে সর্বকালের অন্যতম সেরা কণ্ঠশিল্পী মান্না দে।
Tuesday, August 16, 2022
যে দিন ভারত স্বাধীন হল... ১৫ই অগষ্ট, ১৯৪৭
(এক একাদশ বর্ষীয় বালকের দৃষ্টি ও অনুভূতিতে ৭৫ বছর পূর্বের দিনটির
স্মৃতিচারণ)
স্মৃতিচারণ)
১৯৪৫ সাল, মে মাস। ইউরোপে দ্বিতীয় বিশ্বমহাযুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা হল। সেই রাত্রিতেই আমরা জামশেদপুর বা টাটানগর থেকে ট্রেণে কলকাতা রওয়ানা হয়েছি, বাবা দীর্ঘ দু বছর পর ঐ শহরের সামরিক হাসপাতাল থেকে বদলি হয়ে কলকাতার আলিপুরের কমান্ড মিলিটারী হাসপাতালে নিযুক্ত হয়েছেন। ট্রেনে দু-তিনটি কামরা ভর্তি আমেরিকান ও বৃটিশ সৈন্যরা, পথে প্রত্যেক স্টেশনে নেমে মদমত্ত হয়ে তাদের মহোল্লাসে বাঁধনহীন নৃত্য-গীত-হুল্লোড় অন্য যাত্রীদের বিনোদনের পরিবর্তে আশঙ্কাই সৃষ্টি করছিলো। ভোরবেলা কলকাতা পৌঁছোনো গেল। তখন স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য মিটিং-মিছিল-সত্যাগ্রহ-হরতাল এক নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা, সেদিনও শহরে ধর্মঘট পালিত হচ্ছে, তবে অতি প্রত্যুষে আমরা কোনোক্রমে একটি ঘোড়ার গাড়ী অবলম্বন করে ভবানীপুরে দাদামহাশয়ের বাড়ী পথে বিনা বাধায় উপনীত হলাম।
স্বাধীনতা তখন দুয়ারদ্বারে। মহাযুদ্ধের অবসানে বৃটিশ সাম্রাজ্য হীনবল, বিধ্বস্ত, তাদের শহরগুলির অনেকাংশই ধ্বংশস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই অবস্থায় এই বিশাল দেশে, অতি প্রতিকূল পরিবেশে, ৩৪ কোটি গভীর বিদ্বেষপূর্ণ, প্রতিরোধী জনসাধারণকে নিয়ন্ত্রণ করে সুস্থ প্রশাসন চালনা করা তাদের পক্ষে কার্যতঃ অসম্ভব। ১৯৪৬ সালের ভারতীয় নৌসেনা বিদ্রোহে তাদের এই সিদ্ধান্তে শিলমোহর পড়লো। স্থির হলো যথাশীঘ্র সম্ভব তারা ভারতীয় নেতৃত্বের হাতে শাসনভার সমর্পণ করে এই দেশ পরিত্যাগ করবে।
১৬ই অগষ্ট, ১৯৪৬। কলকাতার ইতিহাসে কলঙ্কতম দিন রচিত হলো বিনা সতর্কীকরণে বীভ স সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামায়। জিন্নার প্ররোচনায়, তখন বাংলায় শাষণরত পাকিস্থানপন্থী মুসলীম লীগের ষড়যন্ত্রে, অবিভক্ত বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সুরাবর্দীর ইচ্ছাকৃত নিস্ক্রিয়তায় যে নারকীয় মারণযজ্ঞের অবতারণা হলো তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরলতম। বিনা প্রতিরোধে সশস্ত্র গুন্ডাবাহিনী যথেচ্ছা খুন-জখম, অত্যাচার, লুটপাট, অগ্নিসংযোগে প্রবৃত্ত হলো। সে ভয়াবহ সময়ের কথা সেই বাল্যমনের চিত্রপটে গভীরভাবে অঙ্কিত আছে, তা কোনোদিন বিস্মরণ হবে না। পাড়ায় পাড়ায় সুরক্ষার জন্য প্রস্তুতি পড়ে গেল, ছেলেদের দল দিবারাত্রে সজাগ পাহারায় টহল দিতে লাগল, তাদের অস্ত্র ছুরি, বঁটি, লাঠিসোটা, সোডার বোতল, মশাল। আমাদের বাড়ীর ছাতে ইট-পাটকেল স্তূপাকার করে রাখা হলো, দাদামশায়ের দুনলা বন্দুকটি তেল মার্জনা করে পরিস্কৃত করে রাখা হলো শত্রুবাহিনীর মুকাবিলা করার জন্য। দুর থেকে ভেসে আসা হৈ-হট্টগোল, গোলমালের শব্দ, কোন কোন গৃহে অগ্নিসংযোগের দরুন লেলিহান অগ্নিশিখা শরীর-মনে শিহরণ, ভীতি সঞ্চার করলো। দিনের বেলা চতুর্দিক থেকে হাড়-হিমকরা দুঃসংবাদ আসে, আর আমাদের আহার-নিদ্রা ব্যাহত হয়। এই নৈরাজ্যের হিংস্র, আতঙ্ককর সময় প্রলম্বিত হয়েছিল স্বাধীনতালাভের দিন পর্যন্ত, বহু প্রাণহানি, অত্যাচার, অগ্নিসংযোগ, অবাধে লুটপাটের পর। দেশভাগ হওয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলো।
১৪ই অগষ্ট, ১৯৪৭। দুরু দুরু বক্ষে, অসীম আগ্রহে আমরা অপেক্ষা করছি সেই বহু বাঞ্ছিত, ৩৪ কোটি দেশবাসীর প্রাণমনে আকাঙ্খিত আগামী কাল সেই দিনটির জন্য। দীর্ঘকালব্যাপী কোটি কোটি জনসাধারণের প্রাণান্তকর সংগ্রামের ফসল বিদেশী শাষনমুক্ত সম্পূর্ণ স্বনিয়ন্ত্রিত স্বাধীন দেশ, এ যেন আমাদের এক স্বর্গীয়, মধুর স্বপ্নের রূপায়ণ! এই দিনটি ক্ষুদিরাম-প্রফুল্লচাকী সমেত বহু শহীদের পুণ্য রক্ত-তর্পণে শুদ্ধ, সুদীর্ঘ কালের সংগ্রামের, অসংখ্য নেতা ও কত সাধারণ মানুষের জীবননাশ, ত্যাগ, অত্যাচার, কারাবাস ও অমিত দুঃখবরণের সার্থক পরিণাম। আর তো কয়েক ঘন্টার অপেক্ষা!
সে রাত্রে সবার চোখে নিদ্রা সূদুর পরাহত। প্রতিটি মিনিট, প্রতি পল-অনুপল আমরা গুণছি সেই মহামূহুর্তের জন্য, যখন ভারতবর্ষ পৃথিবীর মানচিত্রে একটি অনন্য বিশাল স্বাধীন উপমহাদেশ হিসাবে স্বীকৃত হবে, যখন আমরা গর্বভরে, মস্তক উন্নত করে জগতের অন্যান্য স্বাধীন দেশগুলির সাথে একাসনে বসার অধিকারের সম্মান অর্জন করব।
ঠিক মধ্যরাত্রির ঘন্টা বাজলো। সঙ্গে সঙ্গে ঘরে ঘরে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনির নিনাদ, মন্দিরে মন্দিরে কাঁসর-ঘন্টা-ঢাক বাদ্য সহযোগে দেব-দেবীর বিশেষ পূজা ও আরতি, গীর্জাগুলিতে ঘন্টাধ্বনি, বন্দরে একাধিক জাহাজের সুতীক্ষ্ণ বাঁশী, ফোর্ট উইলিয়াম থেকে কামান দাগা হল। দিল্লী থেকে বেতারে ভেসে আসছে নেহরুজির লোকসভায় সদস্যদের সন্মুখে সেই গায়ে কাঁটা দেওয়া ভাষণ, Tryst with Destiny। বড়রা নিবিড় মনঃসংযোগে শুনছেন সেই অসাধারণ ভাষণ, আমরা ছোটরা পাশে বসে বুঝবার চেষ্টায় আছি, কি এক আবেগে কণ্ঠ অবরুদ্ধ, চক্ষু বাষ্পাচ্ছন্ন, এক অপূর্ব সম্মোহনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তারপর তিনি স্বাধীন ভারতের প্রথম পতাকা উত্তোলন করলেন দিল্লীর ইন্ডিয়া গেটে, বেতারে সেই শ্রবণেই আমরা স্বতঃস্ফূর্ত, তাৎক্ষণিক স্বোচ্ছাসে নৃত্য, গীত ও করতালি দিয়ে সদ্যোজাত নবভারতকে প্রণতি জানালাম।
সেই মধ্য রাত্রিতেই গৃহবাসীরা উল্লাসে মাতোয়ারা হয়ে রাস্তায়,পথে,পার্ক-উদ্যানে বহির্গত। সম্পূর্ণ অপরিচিতরাও পরষ্পরের প্রতি প্রীতি-সম্ভাষণ, কোলাকুলি, দেশবাসীরা যেন এক অখন্ড ভ্রাতৃবন্ধনে আবদ্ধ, তাদের যেন একটিই পরিচয়, তারা স্বাধীন ভারতবাসী। ঠিক এক বছর পূর্বে যে কদর্য ভ্রাতৃঘাতী নিধনযজ্ঞে চার সহস্রাধিক প্রাণ বলিদান হয়েছিল সেটি আজ যেন এক অলীক দুঃস্বপ্ন, আজ কোলাকুলির, প্রীতির মেলবন্ধনে ধর্ম, জাতি, প্রাদেশিকতা সব একাকার.....এক জাতি, এক প্রাণ, একতা। আবির খেলায় আকাশ-বাতাস রঙ্গীন, এই অকাল হোলি উৎসবে সর্বজন মাতোয়ারা! কালী পটকা, দোদমার কর্ণবিদারী আওয়াজে, তুবড়ীর অগ্নি ফোয়ারায় অকাল দীপাবলীর আমেজ এসে যায়। সব মিষ্টান্ন ভান্ডার খোলা, অকাতরে রসগোল্লা-সন্দেশের হরির লুট চলছে, দোকানীরা আজ দরাজ দিল! এক অত্যুৎসাহী মাস্তুতো দাদা বৌবাজারের ভীমনাগের দোকান থেকে তাদের নব সৃষ্টি তেরঙ্গা সন্দেশ এনে হাজির, আমাদের উৎসাহের অন্ত নেই! বোরোলীন, জবাকুসুম, লিলি বিস্কুট ঘোষণা করেছে স্বাধীনতা দিবসে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এক হাজার পণ্যদ্রব্য বিনামূল্যে বিতরণ করবে।
ভোরের আলো ফুটে উঠল। নবজাতক শিশু স্বাধীন ভারতবর্ষে আজ প্রথম সূর্যোদয়। অগণিত প্রভাত-ফেরীর গান শোনা যাচ্ছে....ও আমার দেশের মাটি তোমার পায়ে ঠেকাই মাথা। তখন প্রতিটি বিশিষ্ট দিনের ভোরে প্রভাত-ফেরীর সুরে আমাদের ঘুম ভাঙ্গতো, নেতাজীর জন্মদিন, ২৫শে বৈশাখ, দোলযাত্রা, নববর্ষে। পাড়ায় পাড়ায় ছেলেমেয়েরা ভাড়া লরীতে শহর পরিক্রমা করতো, গানে, আবৃত্তিতে মাতিয়ে দিয়ে। আজ সবই দেশাত্মবোধক গান সমবেতকণ্ঠে শোনা যায়, একটি দল উচ্চতানে পরিবেশন করছে
বল বল বল সবে শত বীণা-বেনু-রবে
ভারত আবার জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে
আমাদের পাড়ার ছেলেমেয়েরা বোধহয় লরী যোগাড়ে অক্ষম হয়েছে, অদম্য উৎসাহে তারা পদযাত্রার সাথে সাথেই উদাত্তকণ্ঠে গাইছে
সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভুমি
তাদের অত্যুৎসাহী একজনের গলায় দোদ্যুলমান একটি চাদরে আবার একটি হারমোনিয়াম শোভা পাচ্ছে !
বেলা বাড়বার সাথে কয়েকটি অভিভাবকের পরিচালনায় আমরা ছোটরাও রাস্তায় বেরিয়ে পড়লাম, শহরের অধিবাসীরা কি ভাবে অবারিত আনন্দ-উৎসবের ফোয়ারায় মেতে উঠেছে, এই দৃশ্য তো জীবনে একবার বই দুবার আসে না। কিন্তু তার মধ্যেও একটি বেদনা পাষাণের ন্যায় হৃদয় ভারাক্রান্ত করে আছে, এই আনন্দ-যজ্ঞের হোতা দেশবাসীর সেই প্রিয়তম প্রাণপুরুষ কোথায় ? নেতাজী বিহনে এ যেন শিবহীন যজ্ঞ, রামবিহীন অযোধ্যা! আজ সেই পুরুষশ্রেষ্ঠের বাসভবন মহাতীর্থে পরিণত হয়েছে, আজ আপামর শহরবাসীর শ্রদ্ধানিবেদনের গন্তব্যস্থল এলগিন রোড। তাই কি বারংবার শোনা যাচ্ছে সমবেত আকুল কণ্ঠে সেই গীতটির ধ্বনি.....তোমার আসন শূণ্য আজি, হে বীর পূর্ণ করো!
আর পাখীর চোখের মত গভর্ণমেন্ট হাউস....এখন রাজ ভবন.....দর্শনের জন্য জনতা হাঁটা দিয়েছে ডালহাউসি স্ক্যোয়ারে। কোনো পরিবহনে যাওয়া অসম্ভব, যদিও আজ সবই বিনা মাশুলে। বাদুড়-ঝোলা বইতেই পড়েছি, আজ চাক্ষুষ অভিজ্ঞতা হলো কি ভাবে বাস-ট্র্যামের ভিতরে, সন্মুখে, পশ্চাতে এমন কি ছাতেও ভ্রমণ করা যায় এই অবিশ্বাস্য দৃশ্যে! ছোটলাটসাহেবের এই প্রাসাদ সিপাই-শান্ত্রীর পাহারায় সূচিভেদ্য সুরক্ষায় পরিবেষ্টিত হয়ে থাকে, তিনি কলকাতা ত্যাগ করেছেন, আজ ঘোষণা করা হয়েছে হর্ম্যটি জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত। বিদেশি শাষকবর্গ দেশের সম্পত্তি দেশবাসীর হাতেই সমর্পণ করেছে। তবে এর ফলে কিছু পরিতাপজনক ঘটনা ঘটলো, কিছু বিশৃঙ্খল দর্শনার্থীদের অবাঞ্ছিত ক্রিয়াকলাপের ফলে কয়েকটি দামী আসবাব, অমূল্য ভাস্কর্য ও চিত্রকলা ক্ষতিগ্রস্ত হল।
আজ বাড়ীতে ভোজন-মহোৎসব। রাঁধুনী ব্রাহ্মণকে সরিয়ে মাসীমারা কোমর বেঁধে রাঁধতে লেগেছেন...গোবিন্দভোগ চালের পোলাও, ছোলার ডাল, তপসে মাছ ভাজা, পাকা রুই মাছের কালিয়া, আলুবখরার চাটনী ও ছানার পায়েস। এই শেষোক্ত পদটি আমার সত্তরোর্দ্ধ দিদিমার স্বহস্তে সযত্নে সৃষ্টি, এই অমৃততুল্য সুখাদ্যটির স্বাদের তুলনায় ক্ষীর-রাবড়ী-মালাইও হেয় মনে হতো। অতি সাত্বিক দাদামশায়ের গৃহে মাংস, মুরগীর ডিমের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
সন্ধ্যা নামলো। সব বিশিষ্ট সরকারী ভবন, যাদুঘর, মনুমেন্ট, ভিক্টোরিয়া আলোকমালায় সজ্জিত, সাধারণ সব গৃহে অসংখ্য প্রদীপ, মোমবাতির বাহার...তখন তো টুনি বাল্বের প্রচলন হয় নি....চিরপরিচিত শহরটি মনে হচ্ছে সম্পূর্ণ অচেনা, যেন কোন ঋষির মন্ত্রবলে এটি একটি অপরূপ জ্যোতির্ময় মায়াপুরীতে পরিণত হয়েছে।
হৈ-হুল্লোড়, আকাশে তারাবাজি, ঢাকের বাদ্যি, গানের সুরচ্ছটার মধ্য দিয়ে এই স্বপ্নময় দিনটির অবসান হল। সন্মুখে কঠিন সংগ্রাম, শুরু হবে পরিশ্রম, শিক্ষা, শৃঙ্খলা ও সততার মাধ্যমে আমাদের এই নিপীড়িত, ক্ষতবিক্ষত দেশটিকে পুনর্গঠন করে বিশ্বসভায় উচ্চমর্য্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করা।
Saturday, August 6, 2022
নবাব সুলিমুল্লাহর জীবনী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নদ্রষ্টা , যার দান করা ৬০০ একর জমির উপর দাড়িয়ে আছে আজকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় , ঢাকা মেডিকেল , বুয়েট সেই নবাব স্যার সলিমুল্লাহর কে স্মরণ করে না।
আসুন আমরা সংক্ষিপ্ত পরিসরে হলেও এই জাতির উচ্চশিক্ষার মহানায়ককে জানার চেষ্টা করিভ
নবাব সুলিমুল্লাহর জন্ম ১৮৭১ সালের ৭ ই জুন। তাঁর বাবা ছিলেন নওয়াব স্যার খাজা আহসানউল্লা (১৮৪৬-১৯০১) এবং দাদা ছিলেন নওয়াব স্যার খাজা আবদুল গণি (১৮১৩-৯৬)। এই দুজনই ঊনবিংশ শতকের বাংলাদেশের সমাজ-রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। নিঃসন্দেহে পরিবারটি ছিল অভিজাত ও ধনাঢ্য। কিন্তু অভিজাত পরিবারের সন্তান হয়েও তিনি সাধারণ মানুষের দুঃখকে তিনি নিজের দুঃখ মনে করতেন। তিনি আকাতরে দান-খয়রাত করে গেছেন।
স্যার সলিমুল্লাহর বাবা আহসানউল্লা ১৯০১ সালের ৭ ডিসেম্বর সাড়ে ৩ লাখ টাকা খরচ করে ঢাকায় তথা বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো #বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করেছিলেন, প্রথম বিজলি বাতির আলো জ্বলেছিল #আহসান_মঞ্জিলে।
(১)নবাব সলিমূল্লাহ সেই যিনি সর্বপ্রথম পানীয় জল এবং টেলিফোন ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে আধুনিক ঢাকার জন্ম দেন।
(২)ঢাকার ইঞ্জিনিয়ারিং বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯০২ সালে তিনি ১লাখ ২০হাজার টাকা দান করেছিলেন। সেই টাকায় এবং তাঁর দান করা জমিতে স্থাপিত হয়েছিল আহসানউল্লা স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৯২২ সালে যা আহসানউল্লা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং ১৯৬০ সালে আহসানউল্লা ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে উন্নীত হয়। সেটিই এখনকার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়(BUET)।
(৩) নবাব সলিমূল্লাহ যিনি ১৯০৩ সালে বড় লাট লর্ড কার্জন ঢাকায় সফরে এলে আহসান মঞ্জিলে অনুষ্ঠিত দীর্ঘ বৈঠককে তার নিকট পূর্ব বাংলার সমস্যাগুলো তুলে ধরেন।শেষ পর্যন্ত ঢাকাকে কেন্দ্র করে পূর্ববঙ্গ ও আসাম নামে একটি নতুন প্রদেশ গঠনের বিষয়ে ইংরেজরা মত দেয়।
(৪)নবাব সলিমূল্লাহ যিনি ১৯১১ সালের ২৯ আগস্ট ঢাকার কার্জন হলে ল্যান্সলট হেয়ারের বিদায় এবং চার্লস বেইলির যোগদান উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নওয়াব আলী চৌধুরীকে নিয়ে পৃথক দুটি মানপত্র নিয়ে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।
(৫) (DU) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি জমিই শুধু দান করেননি, প্রধান অর্থদানকারীও ছিলেন। এতে তাঁর অর্থভাণ্ডারে ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। শেষে সরকারের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে মহাজনদের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছিল। জমিদারি চলে গিয়েছিল কোর্ট অব ওয়ার্ডসে।
(৬) নবাব সলিমূল্লাহ যিনি ১৯০৬ সালে নিজস্ব ইতিহাস ঐতিহ্য এবং ধর্ম রক্ষায় প্রায় ছয় মাসের প্রচেষ্টায় পাক-ভারত উপমহাদেশে ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ’ গঠন করেন।
(৭) নবাব সলিমূল্লাহ যিনি আন্দোলনের ফলে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক শিক্ষা বিভাগে মুসলমানদের জন্য সহকারী পরিদর্শক ও বিশেষ সাব ইন্সপেক্টরের পদ সৃষ্টি করেন।
(৭) নবাব সলিমূল্লাহ যিনি বর্ণবাদী-ব্রাহ্
মণ্যবাদী চক্রান্তে বিট্রিশ সামাজ্যবাদে শত বছরের অধিক চাষাভূষা, কচোয়ান-দাঁরোয়ান ও গোলাম বানিয়ে রাখা মুসলিমদের কথা ভেবে প্রথম জেগে উঠেন তারপর মুসলিমদের সংগঠিত করার কাজ শুরু করেন।
(৮)নবাব সলিমূল্লাহ, যিনি সুদূর তুরস্কের ভূমিকম্পে মানুষের কষ্টের কথা শুনে সাহায্যের জন্য টাকা-পয়সা পাঠিয়েছিলেন।
(৯)নবাব সলিমূল্লাহ, যিনি মানুষকে তার সকল সম্পদ অকাতরে বিলিয়ে দিয়ে ঋণী হয়েছিলেন। সোনালী ব্যাংক সদরঘাট শাখায় এখনও তার বন্ধক রাখা সিন্ধুক “দরিয়ায়ে নূর” রক্ষিত আছে।
আচ্ছা আমরা ক'জন জানি এই মহান ব্যক্তির কথা? তার অসামান্য কীর্তির কথা?
এই বুয়েট না থাকলে কারা বিশ্বমানের ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুযোগ করে দিত?
আজ যত-শত আবর্জনারই আমাদের জ্ঞানের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাড়িয়েছে যেখানে এই মহান ব্যক্তিদের একটু জায়গা কোথায়!!
****রহস্যজনক মৃত্যুঃ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে তৎকালীন হিন্দু সমাজ এবং লাটের সাথে তার বাদানুবাদ হয়।
কথিত আছে যে, বড়লাট রাজি ছিলেন না ঢাকায় কোন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে। এই নিয়ে নবাবের সাথে বড় লাটের তীব্র বিতর্ক হয়। এসমসাময়িক সময়েই তার মৃত্যু হয় কলকাতায়। পরে প্রচার করা হয় যে হৃদরোগে তিনি মারা গেছেন।
তিনি সেদিনই কলকাতায় অনুষ্ঠিত তাঁর জানাজায় বিপুল জনসমাগম হয়েছিল। পরদিন লাশ ঢাকায় আনা হয় এবং কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ঢাকার বেগমবাজারে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
উনার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি , আল্লাহ্ উনাকে জান্নাত দান করুন (আমিন)।
( সংগৃহিতঃ রুশো)
Labels:
Medicine
https://dailynewstimesbd.com/
Wednesday, August 3, 2022
কোলে পাঁচ বছরের সন্তানের নিথর দেহ, হাসপাতাল থেকে বাড়ির পথে হেঁটে চলেছেন মা
Tuesday, August 2, 2022
দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে স্ত্রীর চাহিদা মেটাতে হবে, বলছে গবেষণা
দাম্পত্য জীবনে সবাই সুখী হতে চেয়েও অনেকেই পারেন না। বর্তমানে দাম্পত্য কলহের কারণে ভেঙে যাচ্ছে অনেক বিবাহ। আর বিবাহবিচ্ছেদের মূল কারণগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, সঙ্গীর সঙ্গে যোগাযোগের অভাব, শারীরিক চাহিদায় অপূর্ণতা কিংবা মানসিকভাবে নির্যাতন ও অবমাননা ইত্যাদি। এই কর্মব্যস্ত জীবনে নারী-পুরুষ সবাই ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটান। এর প্রভাবই পড়ে দাম্পত্য জীবনে। বিশেষ করে অনেক পুরুষই সারাদিন ব্যস্ত সময় পার করায় স্ত্রীর উপর সেই ক্ষোভ বা রাগ প্রকাশ করেন। এর থেকে সংসারে অশান্তি আরও বাড়তে থাকে। অনেকেই বলেন, স্ত্রী খুশি তো সংসারে শান্তি! ঠিক একই দাবি করছেন গবেষকরাও। সংসারের সুখ নাকি নির্ভর করে স্ত্রীর সুখের উপর, এমনটিই জানাচ্ছে এক গবেষণা।
Monday, August 1, 2022
ডাইনি অপবাদে তিনশ বছরে ৬০ হাজার মানুষকে পিটিয়ে হত্যা!,৩০ লাখ মানুষকে ডাইনি হিসেবে বিচারের মুখোমুখি
ডাইনি অভিযোগে হত্যা: এখনও চলছে ১০ আগস্ট বিশ্ব ডাইনি হত্যাবিরোধী দিবস৷ ইউরোপে তিনশ বছরে অন্তত ৩০ লাখ মানুষকে ডাইনি হিসেবে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিলো৷ হত্যা করা হয়েছিল ৬০ হাজার৷ তবে আফ্রিকাসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে উইচ হান্ট বা ডাইনি নিধন এখনও চলছে৷ গত সাত বছর ধরে প্রতি বছর গড়ে ডাইনি অপবাদে খুনের ঘটনা ৩৫টি। সিআইডি-র রিপোর্ট বলছে, ২০১৫ সালে এ ভাবে ৪৬ জন মহিলাকে পিটিয়ে মারা হয়। প্রতিদিন গড়ে তিন জন। গত ২২ বছরে এক হাজার মানুষকে ডাইনি সন্দেহে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে ঝাড়খণ্ডে। ২০২২ সালে আজ অবধি পাঁচজন এই কুসংস্কারের কারণে আক্রান্ত হয়েছেন। চারজনের মৃত্যু হয়েছে। ঝাড়খণ্ড পুলিশের রিপোর্টে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গিয়েছে। এই রিপোর্ট বলছে, ডাইনি অপবাদে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় এক হাজার জনের মধ্যে ৯০ শতাংশই মহিলা।
Subscribe to:
Posts (Atom)
Latest
-
Testing Recommended: High Cholesterol Can Occur in Childhood MARCH 13, 2014 7 COMMENTS BY: DR. NICOLAS MADSEN High cholesterol ...
-
এখন প্রাকৃতিকভাবেই ব্রেস্ট বড় করা যায়, সার্জারীর প্রয়োজন তেমন হয় না। সাধারণত ৩৪-৩৬ মেয়েদের স্ট্যান্ডার্ড ব্রেস্ট সাইজ। তবে অনেকের ব্রেস্ট...
-
The Princess of Wales says she is in the early tiers of remedy after a most cancers diagnosis. In a video statement, Catherine says it used ...
-
ছেলেদের লিঙ্গ বড় করার কার্যকর ও পরীক্ষিত পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন পুরুষের মত যে আকাঙ্খা সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় সেটি হলো লিঙ্গের আকার আরও বড় ...
-
নাক ডাকার সমস্যা চিরতরে দূর করুন – দেখুন কি ভাবে নাক ডাকার সমস্যা যে বেশ বিরক্তিকর ও বিব্রতকর, তা নতুন করে বলে দিতে হয় না।যিনি নাক ডাকেন ...
-
Victor Sharrah in no way had a trouble with his ingenious and prescient in the first fifty 5 years of his life. But that all modified four y...
-
List of hospitals in Bangladesh From Wikipedia, the free encyclopedia This is a list of hospitals in Bangladesh . In 20...
-
চশমা সম্পর্কে সকল ধারনা চশমা প্রকার, কোথায় পাওয়া যায়, কিভাবে পড়তে হবে, চশমা কিভাবে পরিষ্কার করতে হয়, সারাদিন চশমা পরেন?সারাদিন চশমা প...
-
গর্ভবতী নারীদের সঙ্গে তার বন্ধুরা বা আত্মীয়রা কথা বলার সময় অবশ্যই জিজ্ঞেস করেন, শিশুটি ছেলে না কি মেয়ে হবে? এটি প্রায় সকলের জন্য একটি মজ...
-
A dengue outbreak that has sickened at least 549 Puerto Ricans so a lengthy way this year—most in the capital city, San Juan—has precipitate...
Featured Post
আলট্রাসনগ্রাম ছাড়াই যেভাবে জানবেন গর্ভের শিশু ছেলে নাকি মেয়ে! জেনে নিন বিস্তারিত-
গর্ভবতী নারীদের সঙ্গে তার বন্ধুরা বা আত্মীয়রা কথা বলার সময় অবশ্যই জিজ্ঞেস করেন, শিশুটি ছেলে না কি মেয়ে হবে? এটি প্রায় সকলের জন্য একটি মজ...
jk