Adsterra

a-ads

pop

Sunday, August 1, 2021

স্পিরুলিনা কি ? স্পিরুলিনার উপকারিতা

স্পিরুলিনা কি ? স্পিরুলিনার উপকারিতা


স্পিরুলিনা হল নীলাভ সবুজ ধরনের শ্যাওলা, এটি এক ধরনের বায়োমাস এটিকে সায়ানোব্যাকটেরিয়া বলা চলে। যা মানুষ এবং প্রাণী প্রত্যেকে গ্রহণ করতে পারে। এটির বহু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে স্পিরুলিনা উৎপাদন করা হচ্ছে। এটি ডায়েটরি পরিপূরক খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এছাড়াও অ্যাকোরিয়াম এবং পোল্ট্রিশিল্প গুলিতে মাছ এবং পাখিদের খাদ্য পরিপূরক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। স্পিরুলিনা মূলত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং উপনিবেশ অঞ্চলে লবণাক্ত জলের মধ্যে তৈরি করা হয়ে থাকে। স্পিরুলিনা কয়েকটি প্রজাতির হয়ে থাকে। এগুলো মূলত আফ্রিকা, এশিয়া, ক্যালিফোর্নিয়া, মেক্সিকোর মত দেশগুলোতে উৎপাদন করা হয়ে থাকে। জলের মধ্যে ভাসমান শ্যাওলা থেকেই এগুলি তৈরি করা হয়। ষোড়শ শতাব্দী পর্যন্ত স্পিরুলিনা অ্যাজটেক এবং অন্যান্য মেসমেরিকানদের খাদ্যের উৎস ছিল। পরবর্তী সময়ে এগুলি অন্যান্য দেশে উৎপাদন করা হয়। স্পিরুলিনার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যার জন্য এগুলি দৈনন্দিন খাদ্যের উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এমন বহু উপজাতি আছে যারা স্পিরুলিনা চাষ করে কেবলমাত্র খাদ্য তালিকায় রাখার জন্য। স্পিরুলিনা তৈরীর জন্য ছোট ছোট পুকুর তৈরি করে সেখানে এগুলি চাষ করা হয়ে থাকে।
স্পিরুলিনার উপকারিতা
স্পিরুলিনা এক ধরনের নীলাভ সবুজ শ্যাওলা হলেও এর মধ্যে তীব্র স্বাদযুক্ত গন্ধ রয়েছে। এটি বিভিন্ন উপায়ে স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সহায়তা করে। স্পিরুলিনার মধ্যে থাকা ম্যাক্রোফেজ গুলি প্রাকৃতিক ঘাতক কোষগুলি এবং অন্যান্য এবং কোষগুলিকে সক্রিয় করতে সহায়তা করে। যার প্রত্যেকটিতেই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, স্পিরুলিনা স্নায়বিক স্বাস্থ্যের ওপরেও উপকারী প্রভাব ফেলে। এছাড়াও সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, স্পিরুলিনা ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, এমনকি হাঁপানির মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের প্রতিরোধক হিসেবে সহায়তা করে থাকে। এবার তাহলে জেনে নিন স্পিরুলিনার স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলি –
১) ক্যান্সার নিরাময়ে
স্পিরুলিনার মধ্যে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ উপাদানগুলি শরীরের বিভিন্ন কোষ গুলিতে সক্রিয়ভাবে প্রভাব বিস্তার করে। এছাড়াও শরীরে ক্যান্সারের জীবাণু ধ্বংস করতে সহায়তা করে। মূলত স্তন , কোলন এ ধরনের ক্যান্সার গুলি নিরাময়ের ক্ষেত্রে স্পিরুলিনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। এছাড়াও স্পিরুলিনার ক্যাপসুল বা পাউডার খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করলে শরীরে ক্যান্সারের জীবাণু বাসা বাঁধার সম্ভাবনা কম থাকে। এছাড়াও স্পিরুলিনার মধ্যে থাকা উপাদানগুলি শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রতিরোধ করে যা হলো ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। (2)
গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, স্পিরুলিনা ডিএনএ রূপান্তর করার ক্ষমতা রাখে। এছাড়াও এটি শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে শরীরকে দূরে রাখে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করে ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
২) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে
শরীরে রক্তচাপ কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে স্পিরুলিনা। এটি মূলত শরীরের রক্ত চলাচল কে সক্রিয় করে তোলে। যার ফলে যেকোনো জায়গায় রক্ত চাপ বেঁধে থাকার সম্ভাবনা দূর হয়। এছাড়াও এটি শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কে সঠিক রাখে যার ফলে শরীরের রক্ত প্রবাহে কোনরকম বাধার সৃষ্টি হয় না।
৩) ডায়াবেটিস নিরাময়ে
টাইপ টু ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের ওপর কড়া গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, স্পিরুলিনার পরিপূরক যুক্ত ইঞ্জেকশন ডায়াবেটিক রোগীদের রোগের লক্ষণগুলি কে অনেকটা উন্নত করে। স্পিরুলিনা মেটাফরমিক যুক্ত হওয়ায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। এছাড়া অন্য গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, স্পিরুলিনা এবং অন্যান্য ভেষজ গ্রহণের ফলে রক্তে গ্লুকোজ এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কম হয়। যে কারণে ডায়াবেটিস রোগীদেরর সমস্যা বৃদ্ধি পায় না। এছাড়াও স্পিরুলিনা টাইপ টু ডায়াবেটিস রোগীদের লিপিড প্রোফাইল গুলো কে উন্নত রাখতে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করে। (3)
৪) হৃদযন্ত্র সচল রাখতে
শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে হৃদযন্ত্র কে সঠিক ভাবে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে স্পিরুলিনা। এর পাশাপাশি এটি শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে হৃদযন্ত্র স্বাস্থ্যকর রাখতে সহায়তা করে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, দিনে ৪.৪ গ্রাম স্পিরুলিনা গ্রহণের ফলে রক্তচাপের মাত্রা হ্রাস পেতে পারে। যা নাইট্রিক অক্সাইডের বর্ধিত উৎপাদনকে কম করে রক্তনালীকে শিথিল করতে এবং বিচ্ছিন্ন করতে সহায়তা করে। যার ফলে স্ট্রোক কিংবা এথেরোস্ক্লেরেসিসের মতন রোগগুলি নিরাময়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। এছাড়াও স্পিরুলিনা গ্রহণের ফলে হাইপারকলেস্টেরোলেমিক সমস্যা হ্রাস পেতে পারে, যা কোলেস্টেরল ট্রাইগ্লিসারাইড এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করার সাথে জড়িত। (4)
৫) মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য রক্ষায়
স্পিরুলিনা মস্তিষ্কের প্রদাহ কে কম করতে পারে। মূলত পারকিনসন রোগের কার্যকর পরিপূরক হিসেবে স্পিরুলিনা ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি মস্তিষ্কে ফোলা ভাব এবং প্রদাহজনিত সমস্যাগুলিকে দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়াও স্পিরুলিনা মস্তিষ্কের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কম করে স্মৃতিশক্তি হ্রাস রোধ করতে পারে। নতুন নিউরন গঠনের মাধ্যমে স্পিরুলিনা নিউরনের ঘনত্বের উন্নতি করতে পারে, এই প্রক্রিয়াটিকে নিউরো জেনেসিস বলা হয়ে থাকে। এছাড়াও আলঝাইমার চিকিৎসার ক্ষেত্রে ও স্পিরুলিনা ব্যবহার করা যেতে পারে।
৬) শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে
বেশ কয়েকটি প্রাণীর ওপর করা গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, স্পিরুলিনা শরীরের ইমিউনো মডারেটর হিসেবে কাজ করে থাকে। এটি শরীরকে যেকোন সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এবং তার কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য অনন্য ক্ষমতা তৈরি করে। তাই দৈনিক নির্দিষ্ট পরিমাণ স্পিরুলিনা খাদ্যতালিকায় রাখলে শরীরকে যেকোনো রোগ-জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধে স্বাস্থ্যসম্মত করে তোলা যায়।
৭) রক্তাল্পতা নিরাময়ে
৪০ জন রক্তাল্পতার সমস্যায় ভুগছে এমন বয়স্ক মানুষের উপরে করা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, স্পিরুলিনা সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করার ফলে তাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তাদের রক্তের মধ্যে থাকা কোষগুলি উন্নত হয়েছে। যদিও একটি গবেষণায় এটি প্রকাশ পেয়েছে। তবে এর থেকে আমরা বলতে পারি, স্পিরুলিনা রক্তাল্পতা নিরাময়ে সহায়তা করে থাকে।
৮) হজম স্বাস্থ্যের উন্নতিতে
স্পিরুলিনার মধ্যে থাকা প্রোটিন জাতীয় উপাদান গুলি খাবার যথাযথ হজম করতে সহায়তা করে। এছাড়াও শরীরে অ্যামিনো অ্যাসিড গুলিকে পুনরায় সংশ্লেষ করে স্পিরুলিনা হজম এনজাইমগুলো সরবরাহ করে, যা হজমে সহায়তা করে। বদহজমের সমস্যা থাকলে স্পিরুলিনা গ্রহণের ফলে সেই সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
৯) প্রদাহ নিরাময়ে
স্পিরুলিনার প্রধান সক্রিয় উপাদান হলো ফাইকোকায়ানিন, যা প্রদাহজনক অনুর উৎপাদনকে রোধ করতে সহায়তা করে। যার ফলস্বরূপ স্পিরুলিনা প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। স্পিরুলিনা হল জি এল এ বা গামা লিনোলেনিক এসিডের একটি উৎকৃষ্ট উৎস। যা শৈবালের অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্যগুলি বহন করে থাকে। আর্থারাইটিসের বিরুদ্ধেও স্পিরুলিনা কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, স্পিরুলিনা আর্থারাইটিস চিকিৎসার ক্ষেত্রে কার্টিলেজ ধ্বংসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে থাকে। (5)
১০) এইচআইভি প্রতিরোধে
স্পিরুলিনার পরিপূরক গুলি এইচআইভির উপসর্গ গুলির মোকাবিলায় সহায়তা করে থাকে। তবে এই বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন। সাময়িক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, স্পিরুলিনার বিভিন্ন উপাদান গুলি এইচআইভির বিরুদ্ধে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। (6)
১১) আর্সেনিকের বিষক্রিয়া কমাতে
আর্সেনিকের সমস্যা এখনো বহু দেশগুলোতেই প্রচলিত রয়েছে। বিশেষত পশ্চিমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পূর্বে বাংলাদেশ এবং ভারত। এই সমস্ত দেশগুলিতে আর্সেনিকের বিষক্রিয়া এখনো রয়ে গেছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, স্পিরুলিনার পরিপূরক উপাদানগুলি আর্সেনিকের বিষক্রিয়াকে কম করতে সহায়তা করে। বাংলাদেশি গবেষকদের মতে, আর্সেনিকের চিকিৎসার ক্ষেত্রে স্পিরুলিনার পরিপূরক গুলিকে চিকিৎসা ব্যবস্থায় ব্যবহার করা উচিত। অন্য একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, দীর্ঘস্থায়ী আর্সেনিক রোগে আক্রান্তরা স্পিরুলিনা গ্রহণের ফলে তাদের দেহে ভারী ধাতুর গ্রহণের ফলে ৪৭% আর্সেনিকের বিষ কম হয়েছে। (7)
১২) ক্যান্ডিডা কমাতে
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, স্পিরুলিনার মধ্যে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদানগুলি ক্যান্ডিডা রোগের বিরুদ্ধে যথাযথ লড়াই করতে পারে। স্পিরুলিনা স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, যা ক্যান্ডিডা ট্রিটমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। এছাড়াও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি শরীর থেকে ক্যান্ডিডা দূর করতে স্পিরুলিনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। (😎
১৩) দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে
স্পিরুলিনার মধ্যে থাকা উপাদানগুলি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এগুলি চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে। স্পিরুলিনার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর উপাদান, যা চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। এছাড়াও বার্ধক্যজনিত কারণে চোখে যে সমস্যাগুলো দেখা যায়, চোখে ছানি পড়া, কম দৃষ্টি এই সমস্ত সমস্যাগুলিকে দূর করতে স্পিরুলিনা সহায়তা করে। তবে এক্ষেত্রে গবেষণা চলছে। চোখের স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে স্পিরুলিনার কিভাবে ব্যবহার করে যেতে পারে সেটাই এখন দেখার।
১৪) ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায়
স্পিরুলিনার মধ্যে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সম্পন্ন উপাদানগুলি ত্বকের ফ্রি র্যাডিকেল কম করতে এবং ত্বক থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলো কে বের করে দিতে সহায়তা করে। যার ফলে ত্বকের স্বাস্থ্যের ওপর সরাসরি এগুলি প্রভাব ফেলতে পারে। স্পিরুলিনা মূলত ত্বকের মৃত কোষগুলোকে নির্মূল করে নতুন কোষ তৈরি করে, যার জন্য মৃতকোষের ফলে যে সমস্যা দেখা যায় সেগুলি রোধ করতেও এগুলি সহায়তা করে। এছাড়াও স্পিরুলিনার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ই, টাইরোসিন, টোকোফেরল এবং সেলেনিয়াম। এই সমস্ত উপাদানগুলি অ্যান্টি-এজিং উপাদান হিসেবে পরিচিত। টাইরোসিন ত্বকের কোষগুলোকে ঝুলে পড়া থেকে আটকায়। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় ত্বকের বৃদ্ধিকে দূর করে। এছাড়াও স্পিরুলিনা পাউডার মিশিয়ে ফেসপ্যাক হিসেবে লাগানো যায়। এটির ব্যবহারে ত্বক আশ্চর্যজনকভাবে নরম এবং মসৃণ হয়ে ওঠে। এর পাশাপাশি ব্রণ, র্যাশের মত চুলকানির সমস্যাগুলো দূর হয়ে যায়।
১৫) চুলের বৃদ্ধিতে
স্পিরুলিনার বাহ্যিক ব্যবহার চুলের বৃদ্ধিকে তরান্বিত করতে পারে। স্পিরুলিনা উপাদান সমৃদ্ধ শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করলে এক্ষেত্রে চুলের বৃদ্ধি যথাযথ হয়। এছাড়াও স্পিরুলিনার প্রোটিন চুল পড়া এবং চুলের বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
এগুলি হল স্পিরুলিনার বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা। তাহলে জেনে নিলেন স্পিরুলিনা আমাদের কোন কোন স্বাস্থ্য উপকারিতা করে থাকে এবং এগুলি কিভাবে আমাদের স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে।
স্পিরুলিনার পুষ্টিমূল্য
ইতিমধ্যে আমরা স্পিরুলিনার স্বাস্থ্যকর উপকারিতা গুলি সম্পর্কে জেনে গিয়েছি। এবার জানবো স্পিরুলিনার মধ্যে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। USDA
প্রতি ১০০ গ্রাম শুকনো স্পিরুলিনার মধ্যে রয়েছে –
শক্তি –২৯০ কিলোক্যালরিকার্বোহাইড্রেট –.৯ গ্রামচিনি –৩.১ গ্রামডায়েটরী ফাইবার –৩.৬ গ্রামফ্যাট –৭.৭২ গ্রামসম্পৃক্ত ফ্যাট –২.৬৫ গ্রামমনস্যাচুরেটেড ফ্যাট –০.৬৭৫ গ্রামপ্রোটিন –৫৭.৪৭ গ্রামট্রিইপটোফান –০.৯২৯ গ্রামথ্রিওনাইন –২.৯৭ গ্রামলিউসিন –৪.৯৪৭ গ্রামলাইসিন –৩.০২৫ গ্রামমেথোনাইন –১.১৪৯ গ্রামসিস্টাইন –০.৬৬২ গ্রামটাইরোসিন –২.৫৮৪ গ্রামঅর্জিনাইন –৪.১৪৭ গ্রামহিস্টিডাইন –১.০৮৫ গ্রামঅ্যালানাইন –৪.৫১৫ গ্রামঅ্যাসপারর্টিক অ্যাসিড –৫.৭৯৩ গ্রামগ্লুটামিক অ্যাসিড –৮.৩৮৬ গ্রামগ্লাইসিন –৩.০৯৯ গ্রামপ্রলিন –২.৩৮২ গ্রামসেরিন –২.৯৯৮ গ্রামজল –৪.৬৮ গ্রামভিটামিন –২৯ ইউজি (৪%)বিটা ক্যারোটিন –৩৪২ ইউজি (৩%)থায়ামাইন (ভিটামিন বি ১) –২.৩৮ মিলিগ্রাম (২০৭%)রিবোফ্লাভিন (ভিটামিন বি ২ ) –৩.৬৭ মিলিগ্রাম (৩০৬%)নায়াসিন (ভিটামিন বি ৩ )-১২.৮২ মিলিগ্রাম (৮৫%)প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি ৫ ) –৩.৪৭ মিলিগ্রাম (৭০%)ভিটামিন বি ৬ –০.৩৬৪ মিলিগ্রাম (২৮%)ফোলেট (ভিটামিন বি ৯) –৯৪ ইউজি (২৪%)ভিটামিন বি ১২ –0 ইউজি (০%)কোলিন –৬৬ মিলিগ্রাম (১৩%)ভিটামিন সি –১০.১ মিলিগ্রাম (১২%)ভিটামিন ই –৫ মিলিগ্রাম (৩৩%)ভিটামিন কে –২৫.৫ ইউজি (২৪%)ক্যালসিয়াম –১২০ মিলিগ্রাম (১২%)আয়রন-২৮.৫ মিলিগ্রাম (২১৯%)ম্যাগনেসিয়াম –১৯৫ মিলিগ্রাম (৫৫%)ম্যাঙ্গানিজ –১.৯ মিলিগ্রাম (৯০%)ফসফরাস –১১৮ মিলিগ্রাম (১৭%)সোডিয়াম –১০৪৮ মিলিগ্রাম (৭০%)পটাশিয়াম –১৩৬৩ মিলিগ্রাম (২৯%)দস্তা –২ মিলিগ্রাম (২১%)
স্পিরুলিনা কিভাবে ব্যবহার করবেন?
স্পিরুলিনা ট্যাবলেট এবং পাউডার আকারে ব্যবহার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে পাউডার কিংবা ট্যাবলেট হিসেবে আপনি গ্রহণ করতে পারেন। জেনে নিন কিভাবে পাউডার এবং ট্যাবলেট গুলি ব্যবহার করবেন –
স্পিরুলিনা ট্যাবলেট :
স্পিরুলিনা ট্যাবলেট গুলি প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন ৬ থেকে ১০ টি ট্যাবলেট গ্রহণ করতে পারেন এবং শিশুদের ক্ষেত্রে প্রত্যেকদিন ১ থেকে ৩ টি ট্যাবলেট গ্রহণ করতে পারেন।
তবে যখন খাওয়া শুরু করবেন প্রথম দুদিন ১ টি করে ট্যাবলেট দিয়ে শুরু করবেন।
পরবর্তী ২ দিনের জন্য দুটি করে ট্যাবলেট নিন। এইভাবে দুদিন দুদিন করে একটি করে ট্যাবলেট বাড়িয়ে যান, যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনি আপনার প্রয়োজনীয় ডোজে পৌঁছাচ্ছেন।
খাবার খাওয়ার ঠিক আগে জল দিয়ে এটি খেয়ে নিতে হবে।
এক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজনীয় ডোজ একবারেও নিতে পারেন কিংবা সারাদিনে ভাগ করে নিতে পারেন।
তবে এটি সন্ধ্যেবেলা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। এটি গ্রহণ করার পর ঘুম পেতে পারে, তাই সন্ধ্যেবেলা গ্রহণ না করাই ভালো।
স্পিরুলিনার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া :
স্পিরুলিনা সাধারণত নিরাপদ উপাদান হিসেবেই বিবেচিত হয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর সামান্য কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে পার্শপ্রতিক্রিয়া গুলি থেকে আগে থেকেই জানা থাকলে, সচেতন থাকলে এগুলি এড়ানো যেতে পারে –
১) টক্সিন এর সাথে বিষক্রিয়া হতে পারে – স্পিরুলিনা যেহেতু এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া তাই এটি কিছু কিছু ওষুধের সাথে বিক্রিয়া করতে পারে। এছাড়াও এগুলো যদি উচ্চ পরিমাণে খাওয়া হয় তাহলে লিভারের জন্য সেটা খারাপ প্রভাব ফেলে।
২) অটোইমিউন অবস্থা খারাপ হতে পারে – স্পিরুলিনা যেহেতু শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় তাই এটি নির্দিষ্ট কিছু অটোইমিউন রোগ কে আরো খারাপ করতে পারে। যার ফলে ক্লোরোসিস, আর্থ্রাইটিস এই সমস্ত রোগ গুলির ক্ষেত্রে স্পিরুলিনা অত্যধিক পরিমাণে গ্রহণ করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। এগুলি কোষকে শক্তিশালী করে তোলার ফলে সেলুলার স্তরে সেগুলো আঘাত হানতে পারে।
৩) রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষেত্রে – স্পিরুলিনা যেহেতু অ্যান্টিকোয়াটেন্ট প্রভাব রয়েছে সেহেতু এটি রক্তকে পাতলা করতে পারে এবং রক্ত জমাট বাঁধার জন্য যে পরিমাণ সময় প্রয়োজন সেটিকে বাড়াতে পারে। এক্ষেত্রে তাই আপনি আহত হলে অতিরিক্ত রক্তপাত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে রক্তের জমাট বাঁধার ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে।
৪) অ্যালার্জিজনিত সমস্যা – সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তারা স্পিরুলিনা গ্রহণ করার ফলে এলার্জির সমস্যা আরও বেড়ে যায়।
খুব বেশি না হলেও এই কয়েকটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া স্পিরুলিনা গ্রহণের ফলে দেখা যেতে পারে। তাই এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলোকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য যথাযথ ভাবে এগুলি ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
আজকের নিবন্ধ থেকে আমরা একটি নতুন উদ্ভিদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। স্পিরুলিনা সম্পর্কে হয়তো আগে আমাদের কাছে এতটা বিস্তারিত তথ্য ছিল না। ইতিমধ্যেই স্পিরুলিনার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে আমরা জেনে গিয়েছি। তাহলে এবার এটি আপনার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। তবে স্পিরুলিনা গ্রহণের ফলে যদি কোন রকম সমস্যা দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে ভুলবেন না। আমাদের এই নিবন্ধটি পড়ে আপনার কতটা উপকার হলো সেটি আমাদের জানাতে ভুলবেন না।

No comments:

Post a Comment

আপনার মেসেজের জন্য ধন্যবাদ, আপনাদের সকল মেসেজ গুলি আমি দেখি, ব্যাস্ততার জন্য অনেক সময় উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়না, আশা করি সময় করে সবার উত্তর দিবো, ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।

Latest

হাতের স্পর্শে সত্যিই কি স্তনের আকার বৃদ্ধি

Featured Post

আলট্রাসনগ্রাম ছাড়াই যেভাবে জানবেন গর্ভের শিশু ছেলে নাকি মেয়ে! জেনে নিন বিস্তারিত-

গর্ভবতী নারীদের সঙ্গে তার বন্ধুরা বা আত্মীয়রা কথা বলার সময় অবশ্যই জিজ্ঞেস করেন, শিশুটি ছেলে না কি মেয়ে হবে? এটি প্রায় সকলের জন্য একটি মজ...

jk